চীনে আমাদের নববর্ষ
ফুজিয়ান প্রদেশের ফুজো শহরের একেবারে শেষ প্রান্তের ‘মিনহউ’ কাউন্টিতে আমাদের বসবাস। আমাদের বলতে আমি, আমার স্ত্রী ও আমাদের একমাত্র কন্যা ‘অন্তু’। পরিবার নিয়ে বিদেশে থাকার তিন বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যাচ্ছি আমরা। আমাদের প্রবাস জীবনের প্রায় সবটাই করোনা মহামারীতে গ্রাস করেছে। কেননা, পরিবার নিয়ে আসার তিন মাসের মাথায় চীনে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে যেটা এখনো পর্যন্ত চলমান। তাই নিঃসন্দেহে আমাদের প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতাটুকু অন্যদের থেকে একটু ভিন্ন।
পরিবার নিয়ে চীনে আসার কিছুদিনের মধ্যে আমরা নববর্ষ উদযাপনের সুযোগ পাই। তিথি নক্ষত্র ও চন্দ্র মাসের উপর চীনা নববর্ষের দিন ক্ষন নির্ভর করায় সাধারনত তীব্র শীতের সময়ে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের চীনা নববর্ষ উদযাপিত হয়। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কোন দেশের জাতীয় পর্যায়ে এত আড়ম্বর এবং ধুমধাম হতে পারে সেটা আমরা ২০২০ সালের নববর্ষে স্বচক্ষে অবলোকন করেছিলাম। নতুন পরিবেশে, নতুন উৎসবের রীতি-রেওয়াজ আমাদের মনের ভিতর অনেকটা আবেগাপ্লুত করে তুলেছিল। চারিদিকে এত বেশি আতশ বাজির ফোয়ারা আমরা আগে কখনো দেখিনি। তাছাড়াও কোন উৎসবের আমেজ যে এত বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে সেটাও আমরা প্রথমবার বুঝেছিলাম। চীনা নববর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘নিউ ইয়ার ইভ’-এ নৈশভোজ করায়। যেটাতে আমরা প্রতিবার অংশীদার হই। চীনের প্রধান এই উৎসবকে ঘিরে অনেক প্রস্তুতি বহু পূর্ব হতে লক্ষ্য করা গেলেও এবারের নববর্ষ চীনাদের একটু বেশি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে দেখেছি। এবছর তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে চীনাদের বর্ষপঞ্জিতে বছরগুলিকে ক্রমানুসারে যে ১২ টি প্রাণীর নামের উল্লেখ আছে সে অনুযায়ী এবছর ‘বাঘ বছর’। বাঘকে বেশ শক্তিশালী এবং হিংস্র; সে অনুসারে বাঘ্র বছরকে স্বাগত জানানো বেশিই আড়ম্বরপূর্ণ এবং ভিন্ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। তাছাড়াও মহামারী করোনা বিগত দুই বছরের চীনাদের নববর্ষের আনন্দকে একেবারে ম্লান করে দিয়েছে। একদিকে বাঘ্র বছর অন্যদিকে বিগত দুই বছরের কিছুটা ম্লান হয়ে পড়া আনন্দের ঘাটতি এবারে পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ মোটেও হাতছাড়া করেনি চীনারা। তাদের এই আনন্দের অংশীদার যাতে আমরাও পুরোপুরিভাবে হতে পারি সেজন্য আমাদের মত প্রবাসীদের কথাও চীনারা মাথায় রাখে। তাইতো নববর্ষের আগের দিন ইন্টারন্যাশনাল কলেজের ডিন মহোদয় সহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের বাসায় এসে বেশ কিছু উপহার সামগ্রী ও শুভেচ্ছা বার্তা সম্বলিত কার্ড দিয়ে গেছে। আমার টিউটর
BCYSA.ORG
এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর
ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল :
news.bcysa@outlook.com।