![](https://bcysa.org/uploads/blogs/cvr17.jpg)
আওয়াজ
![](https://bcysa.org/uploads/blogs/cvr17.jpg)
শিরিন আক্তার: রাত তিন টা বাজে, রাহেলা বেগম এর চোখে
ঘুম নেই। মশারীর মধ্যে বসে আছে, ভাপসা গরম এ জীবন অতিষ্ঠ। চৈত্র মাসের এই কাক ফাটাঁ রোদের শেষে রাত গুলো খুব ভয়ংকর
রকমের অসহ্য হয়ে উঠেছে। এই শেষ রাতে ঝিঁঝিঁ
পোকার একটানা ডাক আর দূরে দুই একটা শেয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক ছাড়া কিছু শোনা যায়
না। আগের থেকে এই রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার অভ্যাসটা এখন বেশি হয়েছে, বয়স ও তো কম হলো না।
প্রায় ৬০ এর ঘর ছুই ছুই। আসলে আজ ঘুম টা ভাঙছে অন্য কারনে,আকাশ তার বন্ধুর সাথে মাছ
ধরতে বের হয়েছে একটু আগে। তাই টেনশন এ তার ঘুম আর হয় নি। আকাশের বন্ধুর নাম রেশপ, পুব
পাড়ায় থাকে। দুই জনের গলায় গলায় মিল। হিন্দু মুসলমান কোন ভেদাভেদ নাই, একসাথে যা পাবে
তাই খেয়ে ফেলে দুইজনে। বয়স ২০ এর কাছা কাছি হবে দুইজনের। পড়ালেখা আকাশের কপালে জোটেনি। বাবা
মারা যাওয়ার পর ছেলেটা একবারে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। বাবা
মরা ছেলে দেখে মায়ের ভয়ে অন্য কোন ভাই বোনেরা কিছু বলতে পারে না। তাহলে তার
আর রক্ষে নেই। এই তো সেদিন বড় বড় কাঁকড়া রান্না
করে দুইজন এ দিব্যি খেয়ে ফেললো। এই "খাস নে খাস নে" বলে চিৎকার করতে থাকে
রাহেলা বেগম। কে শোনে কার কথা।
নাড়ী ছেড়া সন্তানকে কিছু বলতেও পারে
না, অসময়ে জন্ম নেওয়া ছেলে হলে যা হয়। সারাদিন
টৈটৈ করে ঘুরে বেড়ায়,এপাড়া সে পাড়া।
এই যে এত রাতে বেরিয়ে গেলো, এত নিষেধ করার পর ও শুনলো না ছেলেটা। তাই আর ঘুম আসলো
না। এত রাতে যাওয়ার কি দরকার ছিলো, সেটাই বুঝতে পারছে
না। মনে মনে রাহেলা বেগম বলে উঠলো "এই
বুড়ো বয়সে আমার হয়েছে যত জ্বালা"। ও দিকে আকাশ বুঝতে পারছে না রেশপ এত পিছনে কি
করে পড়ে গেলো। আকাশে এখনও থালার
মত চাঁদ নিঃশব্দে আলো
দিয়ে যাচ্ছে। তারপর ও এই মিয়াবাড়ির গোরস্তানের সামনে আসলে কেমন গাঁ টা ছমছম করে ওঠে। যদিও আকাশ নিজেকে অনেক সাহসী বলে মনে করে।
BCYSA.ORG
এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর
ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল :
news.bcysa@outlook.com।