
আইইএলটিএস (IELTS Academic)নিয়ে কিছু কথা

মোহায়মিনুল
ইসলাম: আমি এমন অনেকেই দেখেছি যাদের জিপিএ অনেক ভালো কিন্তু তারা আইইএলটিএস দিতে রাজি
নয়। কেন তারা আইইএলটিএসকে এত ভয় পায় জানা নেই। তাই তারা এমন দেশ খুঁজে যেখানে আইইএলটিএস
লাগে না। তবে আমার মতে আইইএলটিএস আহামরি কোন বিষয় নয়। মোটামুটি একটা ভালো আইইএলটিএস
স্কোর আপনাকে যেমন ভালো ভার্সিটিতে এডমিশন পেতে সাহায্য করবে, তেমনি স্কলারশিপ, ভিসা পেতেও
সাহায্য করবে। তাই যাদের স্বপ্ন বিদেশে উচ্চ শিক্ষা, তাদেরকে বলবো আইইএলটিএস দেবার জন্য।
প্রস্তুতি:
অনেকেই চিন্তা করেন যে কোচিং না করলে আইইএলটিএস এ ভালো স্কোর পাওয়া সম্ভব না। তাই একটা ভালো অংকের টাকার বিনিময়ে কোচিং-এ ভর্তি হয়ে যায়। আমি বলছি না কোচিং এ পড়ে আপনার উপকার হবে না। তবে নিজে নিজেই প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভালো স্কোর তুলতে পারবেন। এর জন্য দরকার পরিশ্রম, ধৈর্য্য।
স্পিকিং: স্পিকিং এ ভালো করতে হলে প্রাকটিসের
বিকল্প নেই। ভালো হয় এমন কারো সাথে প্রাকটিস করা যে সামনে আইইএলটিএস দিবে৷ আর যদি
কাউকে না পান, তবে বাসায় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রাকটিস করতে পারেন। শুধু বইয়ের উত্তর মুখস্ত
করে গেলে হবে না।
রাইটিং: রাইটিং এ ভালো স্কোর পাওয়া একটু
কঠিন। কিন্তু অসম্ভব কিছু না। প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখুন। আর পারলে কোন এক্সপার্ট
কি দিয়ে আপনার লেখাগুলো চেক করিয়ে নিয়েন। এতে আপনার ভুল গুলো বুঝতে পারবেন। গ্রামাটিক
ভুলগুলো ধরার জন্য একটা ওয়েবসাইট আছে, যেটি ব্যবহার করতে পারেন।
লিসেনিং: লিসেনিং এ কোন শটকার্ট নেই। অনেক
অনেক প্রাকটিস করতে হবে। আর ফ্রি সময়ে TEDx, BBC podcast, English news শুনতে হবে।
রিডিং: রিডিং এ ভালো করতে গেলে "scanning" &
"skimming" এ ভালো হতে হবে। প্রস্তুতির প্রথম দিকে ইংরেজি
নিউজপেপার, আর্টিকেল পড়তে পারেন কাজে দিবে।
বই:
১। Cambridge:
যারা আইইএলটিএস দিয়েছেন তার সবাই প্রথমে বলবে ক্যামব্রিজের অফিসিয়াল আইইএলটিএস এর বই গুলো কিনতে। আমিও তাদের সাথে একমত। ক্যামব্রিজের এখন পর্যন্ত
১৫ টা বই আছে। অনেকেই দেখেছি ১-১৫ পর্যন্ত কিনে। এটা অনেকটা টাকা নষ্ট করার মতো। আপনি
সরাসরি ৭/৮-১৫ কিনে ফেলতে পারেন। অথবা কারো থেকে পিডিএফ নিয়ে পড়তে পারেন। তবে বই
কিনলে ভালো।
২। Test
Practice Plus: ক্যামব্রিজের বইগুলো শেষ করার পর টেস্ট প্র্যাকটিস প্লাসের
১,২,৩ থেকে প্র্যাকটিস করতে পারেন। তবে এটি তুলনামূলক ক্যামব্রিজের থেকে একটু কঠিন।
৩। Makkar:
স্পিকিং এর জন্য সবাই এটি ফলো করে। আপনি চাইলে বই কিনতে পারেন
বা পিডিএফ সংগ্রহ করে পড়তে পারেন। Makkar এর রাইটিং এর বইটা চমৎকার। রাইটিং
নিয়ে যারা চিন্তায় আছেন তারা Makkar এর রাইটিং এর বইটা ফলো করতে পারেন।
ইউটিউব:
ইউটিউবে অনেক চ্যানেল আছে। তবে আপনার সব চ্যানেল ফলো করার দরকার
নেই, সময়ও পাবেন না। নিচে কিছু চ্যানেলের
লিঙ্ক দিচ্ছি। এগুলো দেখলেই হবে।
১। স্পিকিং এবং লিসেনিং : IELTS Liz
২। রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং : E2 IELTS
৩। রাইটিং : IELTS-up Online lessons
এক্সট্রা ----
AsadYaqub, AcademicEnglishHelp
ওয়েবসাইট :
ফ্রী তে লিসেনিং এবং রিডিং পরীক্ষা দিতে পারবেন : https://ieltsonlinetests.com/
রাইটিং এর জন্য উদাহরণ : https://www.ielts-exam.net/IELTS-Writing-Samples/ielts-writing.htm
পরীক্ষা কোথায় দিবেন?
দু'টো প্রতিষ্ঠান থেকে আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন। একটা
হলো British
council, আরেকটি IDP। সব বড় বড় শহরেই এদের পরীক্ষা কেন্দ্র
আছে। একাডেমি আইইএলটিএস এর জন্য ১৭৫০০ টাকা গুনতে হবে। পরীক্ষা দেওয়ার ১৩ দিনের মাথায়
রেজাল্ট পাবেন।
অনেকেই কনফিউজড থাকে British council এ দিবে নাকি IDP তে। দেখেন দুটি প্রতিষ্ঠানই ভালো। তবে British council একটু প্রফেশনাল। IDP তে একটু ফ্রেন্ডলি এনভায়রনমেন্ট পাবেন। আর শুনেছি speaking & writing এ মার্ক একটু এদিক সেদিক হয়। আমি IDP থেকে দিয়েছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে খারাপ ছিলো না।
কোন দেশে কিরকম আইইএলটিএস লাগে?
১। জার্মানি: জার্মানির অনেক ভার্সিটিতে মাস্টার্স এ MOI দিয়ে আবেদন
করা যায়। তবে ভিসার জন্য ৫.৫ মিনিমাম থাকতে হয়। আগে অবশ্য আইইএলটিএস ছাড়াও ভিসা
পেয়েছে শুনেছি।
২। পোল্যান্ডঃ ভিসা পেতে চাইলে অন্তত ৬.০ রাখুন। এমনিতেই পোল্যান্ড
এ্যাম্বাসি বাংলাদেশীদের ভিসা কম ইস্যু করে।
৩। চায়না : ৯০% ভার্সিটিতে আইইএলটিএস লাগে না। তবে টপ ভার্সিটিগুলো ৭.০ চায়।
৪। ভারত: আইইএলটিএস লাগবে না।
৫। জাপান: অনেক ভালো ভার্সিটির ওয়েবসাইটে দেখেছি মিনিমাম
৫.৫ চায়।
৬। দঃ কোরিয়া: ৫.৫ থাকলে চলবে। তবে আইইএলটিএস স্কোর ভালো
থাকলে ফান্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৭। ডেনমার্ক: মিনিমাম ৬.৫ লাগবে।
৮। নরওয়ে: ৬.৫, তবে কিছু কিছু ভার্সিটির কিছু কিছু প্রোগ্রামে
৬.০ থাকলে আবেদন করা যায়।
৯। নেদারল্যান্ডস: মাস্টার্সের জন্য ৬.৫ থাকতে হবে।
১০। কানাডা: ৬.৫
১১। ইংল্যান্ড: ভার্সিটির উপর নির্ভরশীল। ৬.০ দিয়ে কাজ হওয়ার
কথা।
১২। ফিনল্যান্ড: মাস্টার্সের জন্য বেশিরভাগ ভার্সিটি দেখেছি
৬.৫ চায়।
১৩। থাইল্যান্ড: ৫.০, কিছু ভার্সিটিতে অবশ্য আইইএলটিএস
লাগে না।
১৪। ফ্রান্স: ৬.০-৬.৫ (ভার্সিটির উপর নির্ভরশীল)
১৫। আমেরিকা: ফান্ড পেতে গেলে আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫ বা তার
উপরে রাখা উচিৎ। সেইসাথে GRE
310+
১৬। হাঙ্গেরি: ৬.০, গভঃ স্কলারশিপের জন্য ৬.৫ হলে ভালো।
১৭। পর্তুগাল: যদিও আইইএলটিএস ছাড়া এডমিশন পাওয়া সম্ভব, তবে
ভিসা পাওয়ার জন্য ৬.০ থাকা ভালো।
১৮। অস্ট্রেলিয়া: ৬.৫
১৯। স্পেন: ৬.০-৬.৫
২০। ইউক্রেন: লাগবে না
২১। ইতালি : ৬.০ লাগবে মিনিমাম এ্যাম্বাসি ফেস করতে।
সম্পাদনায়ঃ ইফতে খাইরুল হক ইমন
BCYSA/ Sagar Hossain
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : news.bcysa@outlook.com।