আমার দেখা ইয়েমেনী নারীদের উৎসব উদযাপন এবং জীবন চিত্র
ফারজানা লিজাঃ ইয়েমেনের বিভিন্ন অঞ্চলের ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থী চায়নার অনেক ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছে। আমার প্রভিন্সের বেশ কয়েকটি ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী আছে ইয়েমেনের। এদের মধ্যে অনেকেই স্বামী-স্ত্রী দু'জনই শিক্ষার্থী। তারা সন্তানসহ খুব সাচ্ছন্দ্যে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাংশ মেডিকেল শিক্ষার্থী তার মধ্যে আবার দন্ত চিকিৎসার শিক্ষার্থী বেশি। এছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের ওপরও ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থী অনার্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি তে অধ্যয়নরত আছে।
অনেকেই আবার অনার্স শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাস্টার্স পড়া শুরু করার কারণে দীর্ঘ দিন নিজের দেশে যেতে না পারায় বাবা-মা এর অনুমতি নিয়ে এখানেই বিয়ে করে সংসারের পাশাপাশি পড়াশোনা করছে। অনেক ইয়েমেনী শিক্ষার্থী থাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। কারণ এদের কমিউনিটি খুব ভালো। সবাই সবার বিষয়ে ভীষণ সহযোগী এবং পরিবারের মতই পাশে থাকে।
ইয়েমেনী কালচারে সাধারণত বেশির ভাগ আয়োজনে পুরুষরা আলাদা ভাবে এবং নারীরা আলাদা ভাবে উৎসবের আনন্দ পালন করে। তার মানে নারীরা যখন কোনো আয়োজনে মিলিত হয় তখন কোনো পুরুষ সেখানে যেতে পারে না। কারণ ইয়েমেনী নারীরা কখনও হিজাব ছাড়া কোনো পুরুষের সামনে উপস্থিত হয় না। তাই তারা যখন নিজেদের মত করে উৎসবের আয়োজন করে তখন শুধু নারীরা একত্রিত হয়। আর তখন তারা তাদের পোশাক স্বাধীনভাবে ইচ্ছেমত পরতে পারে। আর সেই পোশাকে ইয়েমেনী নারীদের রূপ মাধুর্য্য অসাধারণ। আমরা বলি আমরা নিজের জন্য সাজগোজ করি। কিন্তু ইয়েমেনী নারীদের দেখে আমার মনে হয়েছে কাউকে (বিশেষ করে পুরুষ মানুষকে) না দেখিয়ে শুধু যে নিজের জন্য সেজে নাচ-গানে মত্ত হয়ে আনন্দ উপভোগ করা যায় আমার আগে কখনও জানা ছিল না।
আমি প্রথম আমার এক প্রতিবেশী ইয়েমেনী বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনে গিয়েছিলাম। আমার বন্ধু তিখরা একজন ডেন্টিস্ট। জন্মদিনের আয়োজনে শুধু মেয়ে শিশু এবং নারীরা উপস্থিত ছিল।
এমনকি তিখরার হাজব্যেন্ডও ঐ সময় বাসার বাইরে
ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলাম। বাচ্চাদের কেক কাটার পর যখন অন্যান্য
ইয়েমেনী মেয়েরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির আয়োজন শুরু করলো তখন আমি একদম হতভম্ব হয়ে গেলাম।
কারণ যাদের আমি শুধুমাত্র মুখমন্ডল দেখেছি তারা এখন নাচ-গানে আনন্দ করছে, তাদের পোশাক সব মিলিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে সময় পার করলাম। সেখানে
কোনো ছবি তোলার অনুমতি ছিল না। শুধুমাত্র বাচ্চাদের সাথে কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম।
গত ২৫শে জুলাই'২১ আমার ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাসের দুই বন্ধু সাহার এবং আবদুল্লাহর বিয়ের দাওয়াত পেলাম। ছেলে মেয়ে দুজনেই আমার সহপাঠী ছিল। আমাদের ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের প্রথম সেমিস্টারেই ওদের এঙ্গেজমেন্ট হয় চায়নাতে। ইয়েমেনে ছেলে পক্ষ এবং মেয়ে পক্ষের বাবা-মা তাদের দুপক্ষের পরিবারের সাথে মিলিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তারা আংটিবদল করেছিল। আর যেহেতু এখানে অন্যান্য আরো ইয়েমেনী শিক্ষার্থী থাকায় তাদের আনুষ্ঠানিকতা চায়নাতে পালন করতে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি। ছোটোখাটো আয়োজনের মাধ্যমে রীতিনীতি মেনে তা সম্পন্ন করে। তাদের ইচ্ছে ছিল ছুটিতে দেশে ফিরে পরিবারের আত্মীয় স্বজন মিলে বিয়ের আয়োজন করবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কা
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : news.bcysa@outlook.com।