আমাদের অর্থ উপার্জন এর উৎসটা হালাল তো?
নাইম সরকার, সাংহাই, চীন থেকেঃ হারাম শব্দটির সাথে সমগ্র মুসলিম ধর্মাবলম্বী পরিচিত। আমরা অবশ্যই হারাম থেকে দূরে থাকবো। ধর্মীয় পয়েন্ট থেকে হারাম তো হারাম ই, তাহলে আমাদের সমাজে কিছু হারাম কাজ কে খুবই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে কেন? যেমনঃ মদ খাওয়া, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, সুদ খাওয়া প্রভৃতি। আর এর সাথে আরেকটা শব্দ যোগ হয় বিদেশে থাকলে - "মুরগি অথবা গরুর মাংসটা কি হালাল"?
কিন্তু সমাজের বিজ্ঞ জনগণ আপনাকে কখনোই প্রশ্ন করে না বা ধর্মীয় পন্থায় আমরা নিজেরাই নিজের কাছে জবাবদিহিতা করার প্রয়োজন মনে করি না তা হলো, আমাদের অর্থ উপার্জন এর উৎসটা হালাল তো?
দুর্নীতি, ঘুষ, দু'নম্বরি পথ অবলম্বন করে চাকুরী নিয়ে উপার্জন করা, অসৎ ব্যবসা, এমনকি যে কোনো ধর্মীয় মতাদর্শে (মুসলিম ধর্মানুযায়ী) অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করা যে হারাম, এটা আমরা ভুলেই গেছি। আবার কিছু কিছু মানুষ কে দেখা যায় হারাম অর্থ উপার্জন টাকে নিজেদের মতো সংজ্ঞায়িত করে হালাল মনে করে নেয়। এ সকল মানুষ গুলিই আবার ধর্মীয় বিষয়ে কথা বলে, এমনকি কিছু কিছু জায়গায় ঐসকল মানুষজন ই মর্যাদা পাচ্ছে। বলা বাহুল্য, মসজিদ এর সামনের লাইন এও তাদের কে দেখে আপনি আশ্চার্যান্বিত হবেন।
উদাহরণস্বরূপ, একজন মানুষের সাধারণ উপার্জন যদি X হয়, সে যদি X উপার্জন দিয়েই জীবন নির্বাহ করে থাকে, তাকে আমরা সফল হিসেবে ধরি না। কিন্তু সে যদি XX বা XXX খরচ করার সামর্থ্য রাখে, আমরা তাকে সফল ব্যক্তি বলে থাকি। তাহলে সফলতার ব্যপারটা কি টাকা দিয়ে বিচার করা হয় ? যদি তাই হয়, তাহলে কিন্তু আমরা হালাল বা হারাম উপার্জন এর কথা বিচার করি না। আমাদের দেশে এমন লোকের অভাব নেই, যারা কোনো না কোনো ভাবে হারাম অর্থ উপার্জন এর সাথে জড়িত, বিশেষ করে শিক্ষিত জনগণ। অনেক সময় এভাবেও প্রশ্ন করা হয়ে থাকে - ছেলে বা মেয়ের বেতন এর বাইরেও আরো উপার্জন আছে কি !
এই সকল কথিত শিক্ষিত জনগণ জানেন যে - আপনার একটি টাকাও উপার্জন এর উৎস যদি হারাম হয় (মুসলিম ধর্মানুযায়ী), তাহলে ওই টাকা দিয়ে আপনি যা ই করেন সব ই হারাম। আর হারাম উপার্জন দিয়ে যেকোনো ভাবে ধর্মীয় কাজে যুক্ত হলেও আপনি বেঁচে গেলেন না। এমনকি হারাম উপার্জনের করা যে কোনো জিনিস দিয়ে যত দিন আপনি বেনিফিসিয়াল হবেন, সেটিও হারাম। এটাকে খুব সহজ ভাবে বুঝানোর জন্য মাল্টি লেভেল মার্কেটিং এর সাথেও তুলনা করা যেতে পারে। আরো সহজ করে বললে, একসময়কার ডেসটিনি কোম্পানি এর কথা বলাই ভালো। আপনার হারাম উপার্জন এর অংশটা ডেসটিনি এর মতোই ঘুরপাক খেতে খেতে আপনার কাছেই আসে। আমি মাঝে মাঝে ভেবে পাইনা, হারাম উপার্জনকে আমরা কেন হারাম ভাবে দেখতে পাই না?
আমার মনে হয় না এমন বিবেকহীন মানুষ অন্য কোনো দেশ এ আছে কিনা। তাও আবার কথিত মুসলিম দেশের মানুষ। টাকার জন্য কত নিচে নামা যেতে পারে তা আমাদের দেশের কিছু কিছু জনগন থেকেই দেখা যায়। হাজারো উদাহরণ দেওয়া যাবে - বেশি দূরে যাবো না, মানুষের বিবেক বুদ
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : news.bcysa@outlook.com।