বন্ধুত্ব এবং একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা
অজয় কান্তি মন্ডলঃ পরিবার নিয়ে আসার
পরে আমাদের চীনের পারিবারিক সময়টা অনেক মজা আর হৈ হুল্লোড় করেই চলে যাচ্ছে। সব কিছুর মূলে
যে চাইনিজ পরিবারটিকে প্রথমে ধন্যবাদ দিতে হয়, তারা হলেন জেসিকাদের পরিবার। জেসিকা আমার মেয়ে অন্তুর বান্ধবী। আমরা একই
কমিউনিটিতে থাকি। একদিন সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে হাঁটতে গিয়ে পরিচিয় হয় এই পরিবারটির সাথে। অন্তু এবং জেসিকা এত ভালো বান্ধবীতে পরিনত হয়েছে তা স্বচক্ষে দেখা ছাড়া
কাউকে বোঝানো মুশকিল।
ছবিঃ অন্তু এবং জেসিকা
বিকেলে খেলতে গিয়ে
তারা উভয়েই সকালের নাস্তা সেরে
যত দ্রুত পারা যায় বাসায় হোমওয়ার্ক শেষ করে দু'জন দু'জনার সাথে সাক্ষাৎ করে।
বেশীরভাগ দিন জেসিকা এবং তার মা আমাদের বাসায় আসে। এরপর শুরু হয় তাদের দুরন্তপনা।
জেসিকার মা জেসিকাকে আমাদের বাসায় রেখে চলে যান এবং ঘন্টা খানিক পরে এসে আবার নিয়ে
যান। এই এক ঘন্টা ধরে যত ধরনের দুষ্টামি করা যায় তারা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যায়। যখনই
জেসিকার মা জেসিকাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবার আসেন, সেই মুহূর্তে তাদের দুজনের চোখ
মুখে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। কারণ তারা ভাবে উনি আসা মানেই এখানেই দুষ্টামির ইতি
টানতে হবে এবং দু'জনের মজা মাস্তি শেষ হবে, সেজন্য এত খারাপ লাগে তাদের। এরপরে দু'জনকে টেনে হিঁচড়ে আলাদা করে জেসিকাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া
হয়। অন্তুসহ
আমরা সবাই আমাদের বাসার তিনতলার
ব্যালকনি থেকে যতদূর চোখ যায় দেখতে থাকি জেসিকা কান্না করতে করতে ওর মার সাথে
যাচ্ছে আর ক্ষনিক ক্ষনিক আবার অন্তুর সাথে খেলার জন্য পিছনে দৌড়াচ্ছে। খুব কষ্ট
করেই তার মা তাকে বাসা পর্যন্ত নিয়ে যান।
ছবিঃ অন্তু এবং জেসিকাকে
নিয়ে আমার স্ত্রী বার-বি-কিউ তে যাওয়ার আগে
শুধু বাসাতেই নয়, রাস্তায় বা
পথিমধ্যে যেখানেই সে আমাকে দেখে, দৌড় দিয়ে আমার ই-বাইকে (ব্যাটারী চালিত স্কুটি)
উঠে এসে বসে। ওর মা বাবা কেউ তখন ওকে নামাতে পারেনা। আমি অল্প একটু সময় ঘুরিয়ে
তারপরে জেসিকাকে নামতে বলি। অনেক ভুলিয়ে ভালিয়ে তাকে রাজি করিয়ে তারপরে তার মা
বাবার কাছে দিয়ে আসতে সমর্থ হই। সপ্তাহে শুধু ছুটির দুইদিন ছাড়া জেসিকা বাকি সব
দিনই অন্তুর সাথে খেলতে আমাদের বাসায় আসে, অন্তুও মাঝেমধ্যে ওদের বাসায় যায়। এছাড়া প্রতিদিন
বিকেলে তারা বের হয় স্কুটি, সাইকেল,
রোলার স্কেট নিয়ে খেলতে।
ছবিঃ অন্তু এবং জেসিকা
অন্যান্য বন্ধুদের সাথে নাচের প্রশিক্ষণ ক্লাসে
সম্প্রতি তারা একসাথে একটা
নাচের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সপ্তাহে দু'দিন ক্লাস থাকে তাদের। কোনো কোনো দিন আমি বা
কোনো কোনো দিন জেসিকার মা দু'জনকে নাচের ক্লাসে নিয়ে যান
BCYSA.ORG
এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর
ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল :
news.bcysa@outlook.com।