খাইরুল ইসলামঃ হাওয়ার উপর চলে গাড়ি লাগেনা পেট্রোল ডিজেল, বলছিলাম বাইসাইকেলের কথা। পরিবেশ-বান্ধব, স্বাস্থ্যকর আর সাশ্রয়ী সব দিক দিয়েই বাহন হিসেবে এগিয়ে বাইসাইকেল৷ সেই চিন্তা মাথায় রেখে নিজেদের ছোট বড় সব শহরগুলোকে সাইকেল বান্ধব করেছে চীন৷

২০১৮ সালের এক তথ্য মতে জানা যায় যে, চীনে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন নিবন্ধিত বাইক-শেয়ারিং ব্যবহারকারী রয়েছে এবং দৈনিক রাইডারের সংখ্যা ৭০ মিলিয়নে পৌঁছেছে।শেয়ার্ড-বাইসাইকেলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবের উপর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, শিল্পটি ২২১.৩ বিলিয়ন ইউয়ান ($৩৫ বিলিয়ন ডলার) আয় করেছে, ৩,৯০,০০০ চাকরি দিয়েছ। কয়েক বছর ধরে চীনে ৭০টি শেয়ার্ড-সাইকেল কোম্পানি আবির্ভূত হয়েছে, চীনের ছোট বড় সবধরনের শহর, এমনকি গ্রামে মোট ২৩ মিলিয়ন বাইসাইকেল রয়েছে, এবং দিন দিন সেগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে। শেয়ার্ড-বাইক সংশ্লিষ্ট ব্যবসার বৃদ্ধিকে প্রসারিত  করছে। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে,  এই শিল্পটি এক বছরে গ্যাসের ব্যবহার কমিয়েছে ১.৪১ মিলিয়ন টন, যা জাতীয় গ্যাস ব্যবহারের এক শতাংশ।শিল্পটি বছরে ২,৪০,০০০ লোকের কাজের সময়ের সমান ট্র্যাফিকের মধ্যে কাটানো ৪০০ মিলিয়ন ঘন্টা সময় সাশ্রয় করতে সহায়তা করেছে। গত কয়েক বছর চায়না ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (সি.এন.এন.আই.সি) দ্বারা প্রকাশিত তত্ত্বানুযায়ী , কিছু বাইক-শেয়ারিং স্টার্ট-আপগুলি প্রচণ্ড প্রতিযোগিতার পরে বাজারে হারিয়ে গেছে বা অন্যান্য পরিষেবার সাথে একীভূত হয়েছে।২০১৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, কিছু পরিষেবার জন্য শিরোনাম হয়েছে,যে কারণে তাদের গ্রাহকদের আমানত পুনরুদ্ধার করতে সমস্যা হয়েছে, কিছু বাইসাইকেল কোম্পানি পরামর্শ দেয় যে, সেক্টরটিকে আরও ভালভাবে নিয়ন্ত্রিত করা দরকার।

এই বাইসাইকেল গুলো ব্যবহার করা খুবই সহজ। প্রায় সবগুলো কোম্পানির তাদের নিজেদের অ্যাপ’স রয়েছে, অ্যাপ’স গুলোতে নিজের নাম, ফোন নাম্বার, আইডি অথবা পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেলে সেখানে রিচার্জ অপশন আসে, অপশন গিয়ে উইচ্যাট, আলিপে, ব্যাংক কার্ড থেকে রিচার্জ করতে হয়। সাধারণত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর পরই অর্থ গ্রাহকদের একাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়।  ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির রেট ভিন্ন ভিন্ন তবে সেটা খুবই কম। প্রত্যেক বাইসাইকেলে জিপিএস সিস্টেম আছে সেগুলো দিয়ে তারা বাইসাইকেল গুলোর লোকেশন ট্যাগ করে এবং সেগুলো কন্ট্রোল করে থাকে। আলিবাবা কোম্পানির বাইসাইকেল গুলো সরাসরি আলিপে দিয়ে স্ক্যান করে রাইড শেয়ারিং এর জন্য নেওয়া যায়।

এই বাইসাইকেল গুলো যেমন পরিবেশ বান্ধব তেমন সাশ্রয়ী। আরো একটি মজার বিষয় হল প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়েও তাদের নিজেস্ব বাইসাইকেল রয়েছে, সেগুলো ছাত্রছাত্রীরা খুব সহজে রেন্ট নিয়ে ক্যাম্পাসে চলাচল করতে পারে।

লেখক
পিএইচডি শিক্ষার্থী
নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়, নানজিং, চীন 

BCYSA/মাসুম বিল্লাহ