লিয়ানইয়ুনগাং এ একদিন
লুবনা হোসেন লিয়াঃ ক্লাস,ল্যাব আর এক্সাম দিয়ে যখন শুঝৌ মেডিকেলের আপুরা অতিষ্ঠ, তখন হঠাৎ মেহজাবিন আপুর ফোন। কিরে! কি খবর তোদের? চলে আয় আমার এখানে। তো, এভাবেই আমাদের লিয়ানইয়ুনগাং (Lianyungan) ট্রিপ এর সূচনা।
কি ভাবছেন, আমিও মেডিকেল এর?
উহু এতো ব্রিলিয়ান্ট আমি না। আমি লিয়া, পড়াশোনা
করছি চায়না ইউনিভার্সিটি অব মাইনিং এন্ড টেকনোলজিতে। ভার্সিটির প্রথম মেয়ে আর ব্যাচ
এর একমাত্র মেয়ে হওয়ার সুবাদে শুঝৌ মেডিকেলের আপুদের সাথে আমার পরিচয়। আমি বেশ অনেক
আগে থেকেই ঘ্যানঘ্যান করছিলাম ট্রিপে যাবো মেয়েদের সাথে। মেহজাবিন আপুর সাথে আমারও
সম্পর্ক ভালো। তার কাছে যাবো আর আমি থাকবোনা, তা কি হয়?
যেমন বলা, তেমন কাজ।
তার দুইদিন পর আমরা যাবো। আমিতো সারারাত ঘুমাতেই পারিনি।
বার বার ব্যাগ গুছাই, কিছু আবার ভুলে যাইনি তো? আবার কল্পনা করি কেমন হবে সী বিচ। আসলে আমি প্রথম কোনো সী বিচ এ যাচ্ছি
এজন্য অনুভূতিটাও অমূল্য এবং এক্সাইটিং।
দুপুর ১ টায় আমাদের ট্রেন। ট্যাক্সিতে স্টেশনে গেলাম। গিয়ে
দেখি আপুরা উপস্থিত। সবাইকে দেখে এতো ভালো লাগছিলো তা বলে বুঝানো যাবেনা। পিয়া ছিল
আমার একমাত্র জুনিয়র। ওকে পেলেই হলো, অমনি মজা করা শুরু
করলাম। কিন্তু পিয়া মেয়েটা অনেক ভালো। জুনিয়র এমন পেলে লাইফ ঝিংগালালা। তারপর আমরা
ট্রেনে উঠলাম। আমরা ছিলাম ১০ জন মেয়ে।
কিন্তু ব্যপার হলো আমি, মেহজাবিন আপু আর ডরিন আপু আলাদা সিট পাই, আর বাকি সবার একসাথে সিট পড়ে। যদিও সাড়ে ৩ ঘন্টার সফর, তারপরও সবাই গল্প-গুজব না করলে হয় নাকি? যেই বলা সেই কাজ। আপুরা বসেছিল ৬ জন সামনা-সামনি। পাশে ৪ টা সিট ছিল, যার একটায় চাইনিজ শুশু বসেছিল। কোনোরকম উনাকে বুঝিয়ে আমরা পাশে চলে আসলাম। তারপর মজার মজার গল্প, গান, আড্ডা, পিয়ার সাথে দুষ্টামি আর আপুদের বানানো মজার খাবার খেতে খেতে পৌঁছে গেলাম লিয়ানইয়ুনগাং। আমরা উঠেছিলাম মেহজাবিন আপুর হোস্টেলে। রুম টা বেশ বড় ছিল। গিয়েই দেখি হাবিবা আপু আমাদের জন্য মুরগির মাংস রান্না করে এনেছিলেন। জার্নির পর কি যে খুধা লাগে। অমনি ভাত হতেই সবাই সব সাবার করে দিলাম। রাতটা বেশ আড্ডা, গল্প আর কার্ড খেলে চলে গেল। পরের দিন আসল আকর্ষণ সীবিচ এ ঘুরব। এজন্য আমরা ১১ টায় রওনা দিলাম। প্রথমে ট্যাক্সি নিয়ে নামলাম সীবিচ এর গেইট এর সামনে। টিকিট কাটার আগে খেয়াল এলো এই যে, হ্যাট তো আনিনি। এদিকে দেখি রুমি আপু একটা হ্যাট কিনছে। অমনি দৌঁড়ে গেলাম। কিনে ফেললাম একটা হ্যাট। তারপর টিকিট কাটলাম। একটা জিনিস জানিয়ে রাখা ভালো যে, লিয়ানইয়ুনগাং এর ২ টা সীবিচ আছে। একটা আর্টিফিশিয়াল আর একটা প্রাকৃতিক সীবিচ পাহাড় সমৃদ্ধ। আমরা গিয়েছিলাম প্রাকৃতিক সীবিচ এ। টিকিট কেটে ভেতরে গেলাম। এমন মনোরম পরিবেশ আমি আগে কখনও দেখিনি। আমরা সামারে গিয়েছিলাম এজন্য চারিদিকে বালু গুলো চিকচিক করছিল। ঝরঝরে
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : news.bcysa@outlook.com।