বিদেশে অধ্যয়নকালে ডিপ্রেশন মোকাবেলা
নুজহাত ফারহানাঃ বিষণ্নতা, যাকে কিনা
ইংরেজিতে গাল ভরে ডাকা হয় ডিপ্রেশন! অন্তত আজকের যুগে জীবন-যাপন যখন দিনকে দিন হয়ে
উঠছে কঠিন থেকে কঠিনতর, তখন আমরা প্রায় প্রত্যেকেই বোধ হয় জীবনের কোন না কোন
পর্যায়ে এসে ডিপ্রেশনকে অনুভব করেছি। কেউ সফলভাবে উতড়ে গিয়েছি, কেউবা হয়ত অথৈ
সাগরে হাতড়ে বেড়াই কূলে ফিরবার পথ!
বিদেশে অধ্যয়নের সময়টাও জীবনের
অনেকটা সেরকমই একটা পর্যায়। পড়াশোনার চাপ, পরিবারের প্রত্যাশা, ক্যারিয়ারের
উত্থান-পতন, হুট করে একটা কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে এসে নতুন পরিবেশে তাল মেলাতে
না পারা, ক্লাসরুম বুলিইং, একাকিত্ব - নানাবিধ কারণে এই সময়টায় শিক্ষার্থীরা
ডিপ্রেশনে পড়তে পারে। অত্যন্ত সূক্ষ্মতম মানসিক আঘাত থেকেও তৈরি হতে পারে
ডিপ্রেশনের মত এক জটিল সমস্যার। আর তাতে কেবল শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সেই নয়,
জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে অত্যন্ত খারাপ উপায়ে। আজকের প্যান্ডেমিক
পরবর্তী যুগে এ সমস্যা আগের চেয়েও প্রকট। তবে শরীরে অসুখ বাঁধলে যেমন তার রয়েছে
চিকিৎসার ব্যবস্থা, তেমনি মনের ব্যারামও সারিয়ে নেবার রয়েছে হাজারটা পন্থা! চাই
শুধু সচেতনতা।
আজকে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত
মানুষদের খুব কমন কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করব। খুব মনযোগ দিয়ে আচরণগুলোকে প্রত্যক্ষ করলে খুব সহজেই কঠিন সময়কে পার করে ফেলা সম্ভব। চলুন,
জেনে নিই কী সেই বৈশিষ্ট্য, যাকে উপেক্ষা করলে আছে সমূহ বিপদ, এমনকি ঘটতে পারে
সুইসাইডের মত ভয়াবহ পরিণতিও!
০১. ডিপ্রেশনে পড়লে আমরা অনেকেই একটা খুব মারাত্মক ভুল করে ফেলি, সেটি হচ্ছে নিজেকে আইসোলেট বা সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। কথা বলতে ইচ্ছে করে না, কোথাও যেতে মন চায় না, এমনকি পছন্দের কাজগুলোকেও দূরে ঠেলে দিতে ইচ্ছে করে। যে মানুষ এককালে ছিল খুব সামাজিক, সে যেন হঠাৎ করেই একদম নির্জীব হয়ে পড়ে! হ্যাঁ, কখনও কখনও নিভৃতে বসে মনের চাপ কমাতে কিংবা সামনে করণীয় কী এসব চিন্তা করে বের করবার জন্য নিজেকে একটুখানি সময় দিতে হয়। কিন্তু খুব ঘন ঘন বা একটানা আপনি যখন এ কাজগুলো করবেন, তখন আপনার সতর্ক হবার প্রয়োজন আছে! “মানুষ সামাজিক জীব” – কথাটি কিন্তু এমনি এমনি বলা হয় না। আপনি যখন দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করেন, আপনার আত্মবিশ্বাস, কর্মক্ষমতা এবং সার্বিক জীবনপ্রণালীতে তার ছাপ পড়ে। নিজেকে আইসোলেট করে ফেললে, মনের কথা, যত অস্থিরতা এসব চেপে রেখে কারও কাছে শেয়ার না করলে আত্মমর্যাদাও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। সামনে আঁধার হাতড়ে তখন আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই আইসোলেশন নয়, মন খুলে মানুষের সাথে মিশুন। কথা বলুন। নিজের ছোট ছোট সাফল্যকে সেলিব্রেট করুন! হোক সেটি বিছানা থেকে নেমে চার কদম হেঁটে আসতে পারার মত ছোট কোন ব্যাপার! তবে মানসিক অস্থিরতার কালে মনের কথা এমন কারও কাছে বলবেন না, যে আপনার ক্ষতি করার মনোবল পোষণ করে।
BCYSA.ORG
এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর
ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল :
news.bcysa@outlook.com।