
কেন কনফারেন্স থেকে রিসার্চ পেপার রিজেক্ট হতে পারে?

মো: জান্নাতুল আরিফ: কোন কনফারেন্সে যখন কেউ কোন রিসার্চ পেপার প্রকাশ করতে চায় তা দুই ভাবে করা হয় (১) পোস্টার প্রেজেন্টেশন হিসাবে অথবা
(২) সরাসরি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে। প্রথমত আপনাকে কনফারেন্সের জন্য ফুল রিসার্চ
পেপার অথবা এবস্ট্রাক্ট জমা দিতে হয়। ( এটা
নির্ভর করে কোন কনফারেন্সে কমিটি কিভাবে চায়। কোন কোন কনফারেন্সে ফুল পেপার আবার কোথাও প্রথমে এবস্ট্রাক্ট জমা দিতে হয়)।
কনফারেন্স কমিটি কানফারেন্সে জমা দেওয়া সকল পেপার রিভিউ
/ পর্যালোচনার পর কিছু পেপার কে ফাইনালি কনফারেন্সে প্রেজেন্টেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
এমন অনেক সময় দেখা যায় অনেক ভাল টপিক থাকার পরও কনফারেন্স থেকে পেপার রিজেক্ট হয়। কিন্ত
এটা কেন? কনফারেন্স থেকে পেপার রিজেক্ট
হওয়ার কিছু কারণ জানবো এই লেখাতে-
১. রিসার্চ ওয়ার্ক কনফারেন্স থিমের সাথে প্রাসঙ্গিক
কি না: সাধারণত প্রত্যেকটা কনফারেন্স নির্দিষ্ট একটা থিম কে বেইজ
ধরে হয়। উদাহরণ স্বরূপ কোন কনফারেন্সের থিম বা টপিক এরিয়া শুধু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি
বা কমিউনিকেশন রিলেটেড কিন্ত এখন আপনি যদি সোলার এনার্জির কোন রিসার্চ ওয়ার্ক এই কনফারেন্সে
জমা দেন তাহলে সেটা প্রথম বাছাইয়ে কনফারেন্স কমিটি বাদ দিয়ে দিবে। এখন করনীয় হচ্ছে
সরাসরি কনফারেন্সের থিমের সাথে সম্পর্কিত না হলেও, এমন একটা উপায়
বের করতে হবে যাতে আপনার গবেষণার কাজ / ফলাফলগুলি কনফারেন্স থিমের উপর বিস্তৃতভাবে
প্রভাব ফেলতে পারে। কনফারেন্সে আপনার কাজটা গৃহীত হওয়ার জন্য, আপনাকে কনফারেন্সের থিমের সাথে লিংক করার একটা উপায় খুজে বের করতে হবে।
২. গবেষণার গুনগত মান অতি সাধারণ: আপনার জমাকৃত গবেষণার গুনগত মান কনফারেন্সের নির্দিষ্ট মান যথাযথ পূরণ করতে পারেনি। হতে পারে আপনার গবেষণাপত্রতে মৌলিকতার অভাব থাকতে পারে, দুর্বল যূক্তি থাকতে পারে অথবাপেপার লেখার মান যথাযথ হয় নি। অনেক সময় পেপার লেখার কাঠামোগত বা স্ট্রাকচারাল সমস্যার কারনে গবেষণাপত্রটি বোঝা কঠিন হয়ে যায়। এবস্ট্রাক্টে খুব বেশি থিউরি থাকা এবং প্রয়োজনীয় রেজাল্ট না থাকার কারণেও অনেক সময় পেপার রিজেক্ট হতে পারে।
৩.অসম্পূর্ণ বা ভুল গবেষণা: গবেষণাপত্রে
উপস্থাপিত ফলাফল অসম্পুর্ন, ভুল বাত্রুটিপূর্ন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে হতে পারে। গবেষণাপত্রে উপস্থাপিত
ডাটা বিশ্লেষণ অপর্যাপ্ত বা বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে।
৪. নতুনত্ব না থাকা বা lack of significance: গবেষণাপত্রটিতে বিদ্যমান জ্ঞানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে
না পারা বা এর কোন ব্যবহারিক প্রভাব না থাকা। যদি গবেষণাপত্রে অভিনব বা অনন্য দৃষ্টিভংগী
না থাকে যা এটাকে অন্যান্য গবেষণাপত্র থেকে আলাদা করে।
৫. যথাযথ পেপার ফরমেট না মানা: প্রত্যেকটা
কনফারেন্স নির্দিষ্ট একটা ফরমেটে পেপার সাবমিট করতে বলে। যদি সেই ফরমেট যথাযথ মানা
না হয় তবে পেপাররিজেক্ট হতে পারে। আবার পেপার সাবমিট করার নির্দিষ্ট একটা তারিখ আছে
যদি সেই তারিখ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়সীমার মাঝে পেপার সাবমিট না করা হয় তবে পেপার রিজেক্ট
হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৬. অপর্যাপ্ত বা যথেষ্ট রেজাল্ট উপস্থাপন না করা: গবেষণাপত্রে
দুর্বল বা অপর্যাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করা যা গবেষণা প্রশ্ন বা অনুমান বা ফাইন্ডিংস কে
সমর্থন করেনা। ফলাফল উপস্থাপন যথাযথ না হলে বা বোঝা না গেলে গবেষণাপত্রের ব্যাখ্যা
বামূল পয়েন্ট বোঝা কঠিন করে তোলে।
৭.চৌর্যবৃত্তি বা নৈতিক সমস্যা: গবেষণাপত্রে
চুরি বা অনৈতিক বিষয় যেমন তথ্য বানোয়াট, মিথ্যা, বা তথ্যের হেরফের করা। এই ধরনের সমস্যা থাকলে পেপার প্রত্যাখ্যান হতে পারে।
এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে প্রত্যাখ্যানের অর্থ এই নয়
যে গবেষণার কাজটি নিম্নমানের। কখনও কখনও, এটি কেবল কনফারেন্সের
থিম বা পর্যালোচকদের আগ্রহের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নাও হতে পারে। সতর্কতার সাথে কনফারেন্স নির্দেশিকা এবং পূর্ববর্তী
প্রকাশিত গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করা উচিত যাতে
তাদের গবেষণারসাথে আপনার গবেষণাপত্র টি প্রাসঙ্গিক হয়।
লেখক: পিএইচডি গবেষক,
নর্থ চায়না ইলেকট্রিক ইউনিভার্সিটি, বেইজিং,
চায়না।
BCYSA/ Sagar Hossain
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : [email protected]।