বেইজিংয়ের বুকে যুদ্ধের কুচকাওয়াজ: মহাকালের গর্জন
৩রা সেপ্টেম্বর, রোজ বুধবার বেইজিংয়ের রাজপথ এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান এবং জাপানের বিরুদ্ধে চীনের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই সামরিক কুচকাওয়াজ যেন কেবল এক শক্তিপ্রদর্শন নয়, বরং মহাকালের বুকে লেখা এক রক্তাক্ত কবিতার পুনরাবৃত্তি। তিয়েনআনমেন স্কোয়্যার থেকে ভেসে আসা রণধ্বনি, বারো হাজার সৈন্যের পদধ্বনির সাথে মিশে যেন বিজয়ী জাতিসত্তার এক অদম্য হুঙ্কার।
এই কুচকাওয়াজ শুধু চীনের সামরিক শক্তিকে তুলে ধরেনি, বরং তুলে ধরেছে তাদের প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা। আকাশে যখন ড্রোনের ঝাঁক উড়ে চলেছে, তখন মনে হয়েছে যেন একদল হিংস্র শিকারি পাখির দল তাদের লক্ষ্য স্থির করে রেখেছে। হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ঝলকানি যেন আধুনিক যুদ্ধের এক নতুন সংকেত। প্রতিটি যুদ্ধবিমান, প্রতিটি সামরিক যানে যেন ফুটে উঠেছে এক সুপ্ত শক্তি, যা যুদ্ধের বিভীষিকাময় স্মৃতিকে ধারণ করেও ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করছে।
উপস্থিত ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার চোখে ছিল এক স্থির আত্মবিশ্বাস, যা এক শক্তিশালী রাষ্ট্রের নেতৃত্বের প্রতীক। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের উপস্থিতি এই কুচকাওয়াজে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি যেন কেবল জাতীয় বিজয় নয়, বরং এক নতুন বিশ্বশক্তির মেরুকরণের ইঙ্গিত। এই সমাবেশ যেন প্রমাণ করে, বিশ্ব এখন এক নতুন ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে এগিয়ে চলেছে।
বেইজিংয়ের বাতাস আজ ভারী। একদিকে বিজয়ের উল্লাস, অন্যদিকে যুদ্ধের স্মৃতি। এই কুচকাওয়াজ যেমন এক জাতির গর্বকে ধারণ করে, তেমনি এটি যুদ্ধের ভয়াবহতাকে মনে করিয়ে দেয়। ৩রা সেপ্টেম্বর এর বেইজিংয়ের বুকে সামরিক কুচকাওয়াজ এর প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে পুরো বিশ্বে। এই গর্জন যেমন এক সময়ের সমাপ্তি, তেমনি এক নতুন যুগের সূচনা।
Arif/Raoha
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : news.bcysa@outlook.com।